চিয়া সিডের উপকারিতা এবং অপকারিতা
উচ্চ রক্তচাপ বা হাই প্রেসার আমাদের মাঝে একটি সাধারণ সমস্যায় পরিণত
হয়েছে। এটি এমন একটি অবস্থা যেখানে আমাদের রক্তচাপ স্বাভাবিকের তুলনায়
বেশি থাকে। অনেকেই তাদের মানসিক চাপ, ব্যস্ত জীবনযাপন এবং
অনিয়মিত বিভিন্ন অভ্যাসের কারণে উচ্চ রক্তচাপের সমস্যাই ভুগছেন। সাধারণত
আমাদের স্বাভাবিক রক্তচাপের মাত্রা ১২০/৮০ হয়ে থাকে যদি এটি যদি ১৪০/৯০ বা তার
বেশি হয়ে যায় তবে সেটিকে উচ্চ রক্তচাপ হিসেবে ধরা হয়।
আমরা যদি হাই প্রেসার দীর্ঘ সময় পর্যন্ত নিয়ন্ত্রণে না রাখতে পারি সেক্ষেত্রে
আমাদের হৃদরোগ, কিডনি সমস্যা, স্ট্রোক এবং এছাড়াও বিভিন্ন ধরনের
সমস্যা হতে পারে। আজকের আর্টিকেলে আমরা জানবো কেন আমাদের হাই প্রেসার হয়?
দ্রুত হাই প্রেসার কমানোর উপায় থকে শুরু করে হাই প্রেসার কমানোর ঘরোয়া উপায়
ইত্যাদি সম্পর্কে বিস্তারিত জানব।
পোস্ট সূচীপত্রঃ দ্রুত হাই প্রেসার কমানোর উপায় | হঠাৎ হাই প্রেসার হলে
করণীয়
উচ্চ রক্তচাপ কি
উচ্চ রক্তচাপ বা হাই ব্লাড প্রেসার হলো আপনার রক্তে ধমনীর দেওয়ালে স্বাভাবিকের
চেয়ে অধিক পরিমাণে চাপ সৃষ্টি হওয়া। এর ফলে আমাদের হৃদপিণ্ড শরীরের
রক্ত পান করার জন্য স্বাভাবিকের চেয়ে আরও বেশি পরিশ্রম করে। এভাবে
চলতে থাকলে উচ্চ রক্তচাপ আমাদের ধমনী এবং হৃদপিন্ডের ক্ষতি করে যার ফলে
হার্ট অ্যাটাক, স্ট্রোক এর মত জটিল সমস্যা তৈরি করতে
পারে। সাধারণত উচ্চ রক্তচাপের কোন লক্ষণ দেখা যায় না যার ফলে এটি প্রায়শই
"নীরব ঘাতক" হিসাবে পরিচিত।
উচ্চ রক্তচাপ বা ব্লাড প্রেসার মূলত দুইটি প্রধান কারণ এর জন্য হয়ে থাকে।
প্রাথমিক উচ্চ রক্তচাপঃ এই ধরনের উচ্চ রক্তচাপ আমরা সাধারণত
বংশগতভাবে বা পারিভাবিকভাবে পেয়ে থাকি। আপনার পরিবারের কারো উচ্চ রক্ত থাকলে
আপনার মধ্যে এটি হওয়ার ঝুঁকে থাকে এবং আপনার বয়স বাড়ার সাথে সাথে
স্বাভাবিকভাবে রক্তচাপ বাড়তে পারে যা প্রাথমিক উচ্চ রক্তচাপের অন্যতম কারণ।
সেকেন্ডারি হাইপারটেনশনঃ এই ধরনের রক্তচাপ কোন না কোন কারণের মাধ্যমে
হয়ে থাকে যেমন চিকিৎসাগত অবস্থা, ওষুধ বা আসক্তিকর পদার্থ, যা আপনার
রক্তচাপকে আরো বাড়িয়ে তুলছে।
উচ্চ রক্তচাপ বা হাই প্রেসার নির্দিষ্ট কিছু পরিস্থিতিতে দেখা যায় এর
মধ্যে প্রধান কিছু কিছু কারণ হলো।
হোয়াইট কোট হাইপারটেনশনঃ এই পরিস্থিতিতে বাড়িতে থাকলে আপনার
রক্তচাপ স্বাভাবিক থাকে তবে হাসপাতালে কেন্দ্রে গেলে আপনার রক্তচাপ বেড়ে
যায়। সাধারণত মানসিক চাপ এর কারণে এমনটা হয়ে থাকে।
মুখোশযুক্ত উচ্চ রক্তচাপঃ এক্ষেত্রে পরিস্থিতি একেবারে উল্টো
হাসপাতালে আপনার রক্তচাপ স্বাভাবিক থাকে কিন্তু বাসায় আসলে রক্তচাপ
বেড়ে যায়।
স্থায়ী উচ্চ রক্তচাপঃ এই পরিস্থিতিতে আপনি যেখানেই থাকুন না কেন
আপনার রক্তচাপ সবসময় বেশি থাকবে। আপনি বাড়িতে বা হাসপাতালে যেখানেই
থাকুন না কেন আপনার রক্তচাপ বেশি থাকে। এই পরিস্থিতির জন্য
দীর্ঘমেয়াদি চিকিৎসা এবং পর্যবেক্ষণ প্রয়োজন।
রাতের উচ্চ রক্তচাপঃ এই অবস্থায় সারাদিন আপনার
রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকলেও রাতে ঘুমানোর সময় এটি বেড়ে যায়। এটি
কিডনি বা হৃদরোগ রোগের লক্ষণ হতে পারে, এক্ষেত্রে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ
নেওয়া জরুরি।
উচ্চ রক্তচাপ কতক্ষণ স্থায়ী হয়
যদি আপনার প্রাথমিক উচ্চ রক্তচাপ হয়ে থাকে তাহলে আপনার সারা জীবন এটা নিয়ন্ত্রণ
রাখতে হবে।
তবে সঠিক চিকিৎসা এবং স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন এবং সঠিক নিয়ম অনুসরণ করার
মাধ্যমে অতি সহজেই উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ রাখা যায়। সেকেন্ডারি উচ্চ
রক্তচাপ চিকিৎসা করে বা অন্তর্নিহিত কারণ দূর করার মাধ্যমে প্রায়শও ঠিক
করা যেতে পারে। যদি এটি চিকিৎসা মাধ্যমে ঠিক করা সম্ভব হয় সেক্ষেত্রে আপনার
রক্তচাপ স্বাভাবিক হয়ে যায়।
উচ্চ রক্তচাপের লক্ষণ
হাই প্রেসার বা উচ্চ রক্তচাপের তেমন কোন লক্ষণ থাকে না, অনেকের হাই ব্লাড
প্রেসার থাকার পরেও বছরের পর বছর পরে এটি বুঝতে পারে না কেননা ব্লাড
প্রেসারের শরীরে তেমন কোনো লক্ষণ দেখা যায় না। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা
অনুযায়ী উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত ৪৬ শতাংশ প্রাপ্ত বয়স্ক ব্যক্তি জানেনা যে
তাদের এই সমস্যাটি আছে।
যদি আপনার রক্তচাপ অত্যন্ত বেশি হয় সেক্ষেত্রে আপনি নিম্নলিখিত লক্ষণ গুলো দেখে
নিতে পারেনঃ
-
মানসিক কার্যকারিতায় পরিবর্তন যেমন বিভ্রান্তি, মনোযোগে ঘাটতি বা অস্বাভাবিক
আচরণ।
- বুকে ব্যথা বা চাপ অনুভব করা
- মাথা ঘোরা বা ভার লাগা
- শরীরে ফোলা (শোথ), বিশেষ করে হাত, পা বা চোখের চারপাশে
- হৃদস্পন্দন বেড়ে যাওয়া বা অনিয়মিত হওয়া
- স্বাভাবিক হচ্ছে কম প্রসাব করা
- খিঁচুনি
- মাথাব্যথা, বিশেষ করে হঠাৎ শুরু হলে
-
স্ট্রোকের লক্ষণ , যেমন হঠাৎ মুখ ঝুলে পড়া, কথা বলতে অস্পষ্টতা বা হঠাৎ
হাত/পা দুর্বল হয়ে যাওয়া।
-
দৃষ্টি পরিবর্তন, যেমন চোখের ব্যথা, দৃষ্টিশক্তি হ্রাস বা হঠাৎ ঝাপসা দৃষ্টি
এ সকল লক্ষণের মধ্যে যদি কোনো লক্ষণ আপনার মধ্যে দেখা যায় তবে আপনার
ব্লাড প্রেসার পরীক্ষা করুন এবং ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
হাই প্রেসার বা উক্ত রক্তচাপের কারণ কি
উচ্চ রক্তচাপ বিভিন্ন কারণের জন্য হয়ে থাকতে পারে, মাঝে মাঝে বেশিরভাগ
ডাক্তাররা আমাদের উচ্চ রক্তচাপের একটিও কারণ খুঁজে পান না। তবে অনেকগুলো
কারণ রয়েছে যেগুলো আপনার রক্তচাপ বৃদ্ধি করতে পারে। এর মধ্যে প্রধান কিছু
কারণ হলোঃ
- ৫৫ বছরের বেশি বয়স হলে রক্তচাপ বাড়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়
- পরিবারের কারও হাই ব্লাড প্রেসার থাকলে আপনারও হওয়ার সম্ভাবনা বেশি
- ধূমপান বা তামাকজাত দ্রব্য গ্রহণ করা
- অতিরিক্ত ওজন বা স্থূলতা থাকা
- সোডিয়াম সমৃদ্ধ খাবার অতিরিক্ত খাওয়া
- শারীরিক কার্যকলাপের অভাব
- অত্যাধিক মদ পান
কিছু বিশেষ ক্ষেত্রে ডাক্তারও আপনার উচ্চ রক্তচাপ এর মাধ্যম নির্দিষ্ট করতে পারে
না যেমন অন্তর্নিহিত অবস্থা, ওষুধ বা পদার্থ। এর মধ্যে কিছু প্রধান কারণ
গুলো হলোঃ
চিকিৎসাগত অবস্থাঃ
-
অবস্ট্রাকটিভ স্লিপ অ্যাপনিয়া বা ঘুমের মধ্যে শ্বাস বন্ধ হয়ে যাওয়া।
- রেনাল আর্টারি স্টেনোসিস বা কিডনির রক্তনালী সংকুচিত হওয়া।
- প্রাইমারি অ্যালডোস্টেরনিজম বা হরমোনের ভারসাম্যহীনতা।
- থাইরয়েডের সমস্যা
ওষুধের প্রভাবঃ
কিছু ওষুধ যেমন ADHD, প্রদাহ, অটোইমিউন রোগ এবং মানসিক স্বাস্থ্যের অবস্থা
নিয়ন্ত্রণ করে থাকে।
আসক্তিকর পদার্থঃ
অ্যালকোহল, ধূমপান এবং অন্যান্য মাদকদ্রব্য সরাসরি রক্তচাপ বৃদ্ধি করতে
পারে।
যদি আপনার উচ্চ রক্তচাপ হয়ে থাকে তাহলে ডাক্তারের সাথে পরামর্শ নিয়ে শনাক্ত
করুন যেন আপনি সঠিক চিকিৎসা নিতে পারেন।
উচ্চ রক্তচাপ কমানোর ১০টি সেরা উপায়
আপনার হাই প্রেসার বা উচ্চ রক্ত থাকলে আপনি হয়তো ভাবতে পারেন যে এর চিকিৎসার
জন্য কি ওষুধ খাওয়া প্রয়োজন। কিন্তু জীবনযাত্রা পরিবর্তন করার মাধ্যমে
আপনি অতি সহজেই প্রাকৃতিকভাবে এর চিকিৎসা করতে পারবেন। একটি স্বাস্থ্যকর
জীবন যাপন রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি আমাদের শরীরের জন্য অনেক উপকারী এবং
বিভিন্ন রোগ থেকে আমাদের শরীরকে রক্ষা করতে সাহায্য করে।
১। অতিরিক্ত ওজন কমানো
অতিরিক্ত ওজন বিভিন্ন রোগের কারণ এবং অতিরিক্ত ওজনের কারণে
প্রায়শই রক্তচাপ বৃদ্ধি পায়। অতিরিক্ত ওজনের কারণে রাত্রে ঘুমানোর
সময় শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যাঘাত ঘটতে পারে, যাকে বলা হয় স্লিপ
অ্যাপনিয়া। স্লিপ অ্যাপনিয়া আপনার রক্তচাপকে আরও বেশি বাড়িয়ে দিতে
পারে।
ওজন কমানো রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের অন্যতম একটি সেরা উপায়। যদি আপনার ওজন বেশি
হয়ে থাকে অথবা আপনি স্থূলতা থাকে তাহলে সামান্য ওজন কমানো রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করতে আমাদের
সাহায্য করতে পারে। রক্তচাপ মিলিমিটার অফ পারদ (mm Hg) তে পরিমাপ করা হয়।
সাধারণভাবে, প্রতি কিলোগ্রাম ওজন কমানোর সাথে সাথে রক্তচাপ
প্রায় ১ mm Hg কমে যেতে পারে।
২। নিয়মিত ব্যায়াম করার গুরুত্ব
সুস্বাস্থ্য ওজন করার জন্য আমাদের প্রয়োজনীয়তা ব্যায়াম করা
প্রয়োজন। নিয়মিত ব্যায়াম করার মাধ্যমে আমাদের শরীর সুস্থ থাকে এবং
বিভিন্ন স্বাস্থ্যজনিত রোগ দূরে রাখার জন্য সেরা। রক্তচাপ কমানোর
ক্ষেত্রে নিয়মিত ব্যায়াম অনেক উপকারী এবং রক্তচাপ যেন না বলে
এজন্য নিয়মিত ব্যায়াম চালিয়ে যাও গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিদিন নিয়মিত কমপক্ষে
৩০ মিনিট ব্যায়াম করলে রক্তঝাপ নিয়ন্ত্রণ থাকার পাশাপাশি আমরা
সুস্বাস্থ্য অর্জন করতে পারি।
নিয়মিত ব্যায়াম করলে এটি আমাদের রক্তচাপকে স্বাভাবিকের চেয়ে সামান্য
বিশ্বাসকে সাহায্য করতে পারে যা উচ্চ রক্তচাপে পরিণত হওয়ার সম্ভাবনা
কমায়। যারা উচ্চ রক্তচাপের সমস্যায় ভুগেন তারা নিয়মিত ব্যায়াম করার
মাধ্যমে রক্তচাপকে নিরাপদ স্তরে নামিয়ে আনতে পারবেন।
রক্তচাপ কমানোর জন্য যে সকল ব্যায়ামগুলো জনপ্রিয় সেগুলো হলো
হাঁটা, জগিং করা, সাইকেল চালানো, সাঁতার কাটা এবং এই
ধরনের সকল ব্যায়াম।
৩। স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া
স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া আমাদের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয়, এটি আমাদের
রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ রাখতে অনেক বড় ভূমিকা পালন করে। আমিষ এবং প্রোটিন
জাতীয় খাবার যেমন শস্যদানা, ফলমূল, শাকসবজি এবং কম চর্বিযুক্ত দুগ্ধজাত
খাবার এবং কম স্যাচুরেটেড ফ্যাট এবং কোলেস্টেরল সমৃদ্ধ খাবার খেলে উচ্চ
রক্তচাপ অনেকটাই নিয়ন্ত্রণ থাকে।
পুষ্টিকর এবং আমি জাতীয় খাবার খাবার মাধ্যমে আমরা অনেক সহজে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ
রাখতে পারব এর পাশাপাশি এটি আমাদের শরীরের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। পুষ্টিকর
খাবার খাওয়ার মাধ্যমে আমরা সুস্বাস্থ্য ওজন করতে পারি এবং আমাদের বিভিন্ন রোগ
প্রতিরোধে ক্ষমতা বাড়ায়।
৪। আপনার খাদ্যতালিকায় লবণ এবং সোডিয়াম এর পরিমাণ কমানো
আপনার খাবারে সোডিয়াম একটু কম দিলেও হৃদরোগ এবং রক্তচাপের উন্নতি হতে
পারে। রক্তচাপের উপর সোডিয়াম বিভিন্ন ইসলামের মানুষের উপরে বিভিন্ন
প্রকার হতে পারে। সাধারণত খাবারের সোডিয়ামের ব্যবহার ২,৩০০
মিলিগ্রাম বা তার কম করা উচিত এবং প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য ১,৫০০
মিলিগ্রাম বা তার কম সোডিয়াম গ্রহণ করা আদর্শ। অতিরিক্ত সোডিয়াম গ্রহণ
করার ফলে আমাদের রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে বাইরে চলে যেতে পারে। আপনার খাবারে
সোডিয়ামের মাত্রা সীমিত রাখার ফলে আপনি অতি সহজেই আপনার রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে
রাখতে পারবেন।
৫। পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুমানো
পর সপ্তাহের পরে সপ্তাহ ধরে প্রতি রাত ৭ ঘন্টার কম ঘুমালে আমাদের উচ্চ রক্তচাপের
পাশাপাশি শরীরের বিভিন্ন ক্ষতি হতে পারে। আমাদের প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমাণ
ঘুমানো শরীরের পাশাপাশি রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের একটি ভালো মাধ্যম হতে
পারে। ঘুমের ব্যাঘাত ঘটাতে পারে এমন অবস্থার মধ্যে রয়েছে স্লিপ অ্যাপনিয়া,
রেস্টলেস লেগ সিনড্রোম এবং সাধারণ অনিদ্রা, যাকে অনিদ্রাও বলা হয়।
প্রাপ্তবয়স্কদের প্রতি রাত্রে ৭ থেকে ৯ ঘন্টা ঘুমানো অনেক
জরুরী, স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজন। এবং প্রতিদিন সময়ে ঘুমাতে
যান এবং ঘুম থেকে ওঠার অভ্যাস গড়ে যদি আপনার ঘুমের সমস্যা হয় তবে ডাক্তারের কাছ
থেকে চিকিৎসা নিলে ঘুমের উন্নতি করতে সাহায্য করতে পারে। একটি আরামদায়ক ঘুম
সুস্বাস্থ্য অর্জনের পাশাপাশি রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করতে অনেকটা সাহায্য করতে পারে।
৬। মানসিক চাপ কম নেওয়া
ইদানিং সময়ে আমরা বিভিন্ন কারণে মানসিক চাপ নিয়ে থাকি যা আমাদের রক্তচাপ
বাড়ানোর আসল কারণ হতে পারে। রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ রাখার জন্য আপনার মানসিক
চাপ কম করার চেষ্টা করুন। কাজ, পরিবার, আর্থিক অবস্থা বা অসুস্থতার মতো
মানসিক চাপ নিয়ে অনেকে মানসিক চাপের মধ্যে থাকেন তবে এই বিষয়গুলো
সম্পর্কে ভেবে মানসিক চাপ নেওয়ার চেয়ে আপনি সেইগুলো মোকাবেলা করার উপায় খোঁজার
চেষ্টা করতে পারেন এর মাধ্যমে অতিরিক্ত মানসিক চাপ থেকে দূরে থাকতে আপনাকে
সাহায্য করবে।
৭। বাড়িতে আপনার রক্তচাপ ট্র্যাক করুন
আপনার জীবন যাপন পরিবর্তন কাজ করছে কিনা এটি নিশ্চিত করার জন্য আপনি বাসায়
রক্তচাপ পরিমাপ করে দেখতে পারেন। রক্তচাপ মাপার জন্য একটি বিশেষ ধরনের
যন্ত্র ব্যবহার করা হয় যার নাম "স্পাইগমোমনোমিটার"। এই যন্ত্রটি ব্যবহার
করার মাধ্যমে আমরা অতি সহজে আমাদের বাসায় ব্লাড প্রেসার পরিমাপ করতে পারব তবে
একজন পেশাদার ডাক্তার বা স্পাইগমোমনোমিটার ভালোভাবে ব্যবহার করতে
পারে এমন কারো কাছ থেকে এই যন্ত্রটি ব্যবহার করা শিখে নিতে হবে।
৮। কোলেস্টেরল এবং রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণ রাখা
রক্তে অতিরিক্ত শর্করা বা চিনি এবং খারাপ লবণের মাত্রা বেশি থাকলে
হৃদরোগ ও উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকিয়ে অনেকটা বাড়িয়ে দেয়। কোলেস্টেরল এবং রক্তে
শর্করা নিয়ন্ত্রণে রাখতে, রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে এমন কিছু স্বাস্থ্যকর
অভ্যাস চেষ্টা করুন। স্বাস্থ্যকর খাবার খান, ব্যায়াম করুন, অতিরিক্ত ওজন কমান
এবং ধূমপান করবেন না। কোলেস্টেরল এবং রক্তে শর্করা কীভাবে নিয়ন্ত্রণ করবেন সে
সম্পর্কে আপনার ডাক্তারের পরামর্শ অনুসরণ করুন।
৯। ক্যাফেইন কমান
আপনারা অনেকেই নিয়মিত চা, কফি এবং এনার্জি ড্রিংস এর মত পানীয় গ্রহণ করে
থাকেন। এগুলোর মধ্যে একটি উপাদান থাকে যার নাম ক্যাফেইন, অতিরিক্ত ক্যাফেইন
গ্রহণের ফলে আমাদের রক্তচাপ স্বাভাবিকভাবে বেড়ে যেতে পারে। এই জন্যই
সকল যারা নিয়মিত চা, কপি খেয়ে থাকেন তারা নিয়ন্ত্রণ রাখার জন্য ১–২ কাপের
বেশি চা বা কফি না খাওয়াই ভালো।
১০। ধূমপান ত্যাগ করুন
ধূমপান আমাদের শরীরের জন্য অনেক ক্ষতি করে এবং এটি হৃদপিন্ডের উপর বাড়তি চাপ
তৈরি করে। যারা ধূমপান করেন তারা ধূমপান থেকে বিরত থাকার মাধ্যমে আপনার
রক্তচাপ স্বাভাবিক করতে পারবেন এবং হৃদরোগ ও স্ট্রোকের ঝুঁকিও অনেকটা
কমাতে পারবেন।
লেখকের শেষ কথা
সুস্বাস্থ্য বজায় রাখতে চাইলে সঠিক জীবন যাপন ও নিয়ম অনুসরণ করে অভ্যাস গড়ে
তোলা অত্যন্ত জরুরি। নিয়মিত সুষম খাদ্য খাবার মাধ্যমে, পর্যাপ্ত
ঘুমানো, ব্যায়াম ব্যায়াম করা এবং মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণ রাখার
মাধ্যমে আপনি অতি সহজেই উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারবেন। হাই ব্লাড
প্রেসার সঠিক নিয়ম, অভ্যাস এবং চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে চললে স্বাভাবিক রাখা
সম্ভব। প্রিয় পাঠক আপনাদের সুবিধার্থে এই পোস্টটি লিখা আপনাদের যদি এ
পোস্টটি সহায়ক মনে হয় তাহলে আপনার প্রিয়জনদের সাথে একটি শেয়ার করুন যেন তারাও
জানতে পারে উচ্চ রক্তচাপ কি, উচ্চ রক্তচাপ কতক্ষণ স্থায়ী হয়, উচ্চ
রক্তচাপের লক্ষণ, হাই প্রেসার বা উক্ত রক্তচাপের কারণ কি, উচ্চ রক্তচাপ কমানোর
১০টি সেরা উপায় ইত্যাদি।
টেক সমাজের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url